‘বিজেপিতে মেয়েরা সুরক্ষিত নয়’, বিস্ফোরক অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
নিউজ ডেস্ক: বুধবার ডানলপ সাহাগঞ্জের জনসভায় যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঞ্চে উঠেই তিনি বলেন, ‘কি খেলা হবে তো? একুশের ভোটে খেলা একটাই হবে। একদিকে তৃণমূল থাকবে। আরেকদিকে থাকবে সিপিআইএম, কংগ্রেস, বিজেপি। আর আমি থাকব তৃণমূলের গোলরক্ষক। একটা গোলও মারতে পারবেন না। সব বার পোস্টের উপর দিয়ে বেরিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী বলছে, বাংলায় নাকি মা-বোনেরা সুরক্ষিত নয়! বিজেপি শাসিত রাজ্যে সুরক্ষিত তো? বিহার, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, পাঞ্জাবে সুরক্ষিত? সব জায়গায় অরক্ষিত, নয়তো কুরক্ষিত। বিজেপিতে মেয়েরা সুরক্ষিত নয়। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসে মেয়েদের যথার্থ সম্মান দেওয়া হয়। নোয়াপাড়া-দক্ষিণেশ্বর মেট্রোর কাজ আমার আমলে। আর প্রধানমন্ত্রী শুধু ফিতে কেটে বাহবা নিচ্ছেন। সব রেলপ্রকল্প আমি করেছি, তুমি শুধু ফিতে কেটেছো। প্রধানমন্ত্রী মিথ্যে কথা বলছেন, বলতে চাই না। কারণ উনি আজকে আছেন, কালকে থাকবেন না। আমি পদটাকে সম্মান করি।’
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরাকে কয়লা-কাণ্ডে সিবিআই-এর জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘২২-২৩ বছরের মেয়েকে বলছে কয়লা চোর? বাংলার মেয়েরা কয়লা চোর? ঘরের বউকে বলছে কয়লা চোর? আর আসল কয়লা চোরদের কোলে নিয়ে বসে আছেন! নরেন্দ্র মোদীর গায়ে নোটবন্দির টাকার ময়লা লেগে। আপনার সারা গায়ে ময়লা মেখে আছে। ২ লাখ কোটি খরচা করে বাংলার ঘরে ঘরে জল পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে। দেড় কোটি বাংলার ছেলেমেয়ের কর্মসংস্থান আমরা দেব। আমাকে অ্যারেস্ট কর। আমাকে নিয়ে তৃণমূলের সবাইকে অ্যারেস্ট কর। আমাকে এখানে পুঁতলে, আমি দিল্লিতে গিয়ে মাথা তুলে দাঁড়াব। সুস্থ বাঘের চেয়েও আহত বাঘ ভয়ঙ্কর। ডানলপ অধিগ্রহণ করতে চেয়েছিল রাজ্য সরকার। কেন্দ্র সেটা করতে দেয়নি। ডানলপ কর্তা রুইয়ার সঙ্গে বিজেপি নেতাদের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। ক্যাট পার্টি এখন র্যাট পার্টি হয়েছে। পবন রুইয়ার বাড়িতে ২ জন বিজেপি নেতা থাকেন। যাওয়ার সময় আমি দিলীপ যাদবকে বলে দিয়ে যাব। আমি এখানেও বলতে পারি, কিন্তু ওদের নাম মুখ আনতে আমার লজ্জা লাগে।’
অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ ও দেবলীনা দত্ত ইস্যুতে সরব হয়ে মমতা বলেন, ‘সায়নী মেয়েটা দু’টো ট্যুইট করেছে। তাঁকে থ্রেট করেছে। যা তা ভাষায় আক্রমণ করেছে। কথা বলেছে। তাই নিয়ে তাঁকে ও দেবলীনাকে কী অপমানটাই না করেছে। আমরা তো মায়েদের কোলে থাকি। মায়ের আশীর্বাদ আমার আশীর্বাদ। আজ বিজেপি দলের মেয়েদের নিয়ে একটার পর একটা স্টোরি বললে, লজ্জায় শিহরিত হতে হয়। ওই দলে মেয়েরা সুরক্ষিত নয়। অনেকে মুখ বুজে বসে আছে। বলতে পারছে না। আমাদের দলে নারীদের সম্মান করা হয়। মাকে যেভাবে সম্মান করি। কাউকে করি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারকেশ্বর উন্নয়ন পর্ষদ হয়েছে। সিঙ্গুরে ১১ একর জমির উপর অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রি তৈরি হচ্ছে। ডানকুনি থেকে শুরু করে রেললাইন ধরে শিল্প হবে। হুগলিতে অনেক শিল্প হচ্ছে। সিঙ্গুরের চাষিরা আজও ভাতা পান। বন্যা নিয়ন্ত্রণে হুগলি জেলায় প্রচুর কাজ হচ্ছে। আরামবাগ মাস্টার প্ল্যান তৈরি হচ্ছে। একুশের ভোটই বিজেপির ভাগ্য নির্ধারক হবে। বাংলায় হারলে দেশ থেকেও বিদায় নেবে বিজেপি। একটা মাত্র আসন জিতে ভাবছে এবার পুরো হুগলিটাই দখল করবে? আনন্দে ধেই ধেই করে নাচছে। মা-বোনেদের বলছি, যা হয়েছে সব ভুলে যান। হুগলির সব আসন এবার আমাদের দিন। আগের বার বলাগড়ে আমরা ভোট পাইনি। নিশ্চয়ই আমাদের কোথাও ভুল হয়েছিল। সেগুলো সব আমরা শুধরে নেব।’