কৌশিকী অমাবস্যার রাতে কিছুক্ষনের জন্য খুলে যায় স্বর্গের দরজা!শুনুন সেই অলৌকিক কাহিনী
কৌশিকী অমাবস্যা হলো একটি পবিত্র তিথি। এই তিথিতে পৃথিবীর সমস্ত সাধকরা সাধনা করেন। এই তিথিতে দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা ছুটে যান মায়ের মন্দিরে। কিন্তু এই কৌশিকী আমাবস্যা সম্পর্কেও নানান রকম অলৌকিক কথাবার্তা শোনা যায় সেগুলো জানেন তো? কৌশিকী অমাবস্যার দিন দেবী কালী তার দেহের কৃষ্ণবর্ণ পরিত্যাগ করেন ও সেই কৃষ্ণবর্ণের থেকে সৃষ্টি হন দেবী কৌশিকীর। অযোনী সম্ভূত এই দেবী কৌশিকের হাতেই বধ হন অসুর শুম্ভ নিশুম্ভ।
পুরাণে বলা হয় যে শুম্ভ-নিশুম্ভ কঠিন তপস্যা করে ব্রহ্মাকে তুষ্ট করে বর পেয়েছিলেন যে অযোনিসম্ভবা কোন নারী শক্তিই তাদের বধ করতে পারবেন।অন্যদিকে সতী দক্ষযজ্ঞে নিজের আত্মাহুতি দেওয়ার পর কালী বর্ণের হন। একদিন মহাদেব তাকে সকলের সামনে কালী বলে ডাকায় তিনি ক্ষুব্ধ ও অপমানিত হয়ে মানস সরোবরর ধারে কঠিন তপস্যা করেন এবং তপস্যা শেষে তিনি মানস সরোবরের জলে স্নান করে নিজেদের সব কালো কোশিকা ত্যাগ করে গৌরবর্ণা হয়ে ওঠেন।
দেবীর দেহের ত্যাগ করা সেই সকল কোশিকা গুলি থেকে অপূর্ব সুন্দর কৃষ্ণবর্ণ এক দেবী জন্মান, ইনি দেবী কৌশিকী। দুই অসুর কে বধ করে দেবতাদের উদ্ধার করেছিলেন বলেই এই অমাবস্যা কৌশিকী অমাবস্যার রূপে পরিচিত হয়।
পুরাণে বলা হয় যে কৌশিকী অমাবস্যার দিনেই দশমহাবিদ্যার অন্যতম দেবী তারা মর্ত্যে আবির্ভূতা হয়ে ছিলেন। এই দিনই তারাপীঠে সাধনার মাধ্যমে সিদ্ধি অর্জন করেছিলেন সাধক বামাক্ষ্যাপা। বলা হয় যে কৌশিকী অমাবস্যার দিন সারারাত ধরে শ্মশানে সাধনা করলে তা অনেক বেশি ফলদায়ী হয়। এই অমাবস্যা তিথি ভীষণভাবে জাগ্রত এই তিথিতে পুজোপাঠ এবং তন্ত্র সাধনা করলে তার মনস্কামনা পূর্ণ হয়।
কথিত আছে যে কৌশিকী অমাবস্যার রাতে নাকি কিছু সময়ের জন্য স্বর্গের দরজা খুলে যায়। তাই এই রাতে সকল স্বর্গ অভিলাষী ব্যক্তিরা সাধনা করেন। আর সকল পূণ্য ফলের ইচ্ছা রাখা ব্যক্তিরা তপস্যা করেন। এই রাতে মা তারা বামাক্ষ্যাপাকে স্তন্য পান করিয়েছিলেন! এই রাতে শ্মশানের সাধনা সাধককে উচ্চস্বরে পৌঁছে দেয়!
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, 2021 সালে অর্থাৎ এই বছর কৌশিকী আমাবস্যা পরেছে 6 সেপ্টেম্বর ও 7 সেপ্টেম্বর। 6 তারিখ সকাল সাতটা সাত মিনিট থেকে এই অমাবস্যা শুরু হচ্ছে, 7 তারিখ সকাল 6টা 30 মিনিট অবধি এই তিথি থাকছে।