আজ নন্দ উৎসব! খাদ্যরসিকদের কাছে ‘বিশেষ’ কারণে প্রিয় এই দিনটি

নিউজ ডেস্ক: জন্মাষ্টমীর ঠিক পরের দিনই ভারতের বিভিন্ন স্থানে পালিত হয় নন্দ উত্‍সব।

এই উৎসবের বিশেষ মাহাত্ম্য আছে খাদ্য রসিকদের কাছে। এদিন যে শুধুই লুচি বা তালের বড়া থাকে প্রসাদে ত নয়। ওগুলো ছাড়াও আরো বিচিত্র স্বাদের বিভিন্ন লোভনীয় খাবার পেশ করা হয়। শোনা গেছে ফুলুরি থেকে সিঙ্গারাও নাকি থাকে সেই তালিকায়।

কেন পালন করা হয় নন্দ উত্‍সব ?

জানেন নিশ্চয় প্রত্যেক বছর ভাদ্রমাসে কৃষ্ণা অষ্টমী তিথিতে শ্রী কৃষ্ণের জন্মদিবস উপলক্ষে উদযাপিত হয় জন্মাষ্টমী। আমাদের দেশের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যে বিশেষ গুরুত্ব আছে এই দিনটির। এই জন্মাষ্টমীর ঠিক পরের দিনই পালিত হয় নন্দ উত্‍স। শ্রীকৃষ্ণের পালিত পিতা হলেন গোকুল রাজ নন্দ।

পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী ভগবান শ্রী কৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেছিলেন রাত্রে। সেই শ্রী কৃষ্ণের জন্মদাতা বাসুদেব, কংসের রোষের হাত থেকে ছেলেকে রক্ষা করতে তাঁকে রেখে এসেছিলেন নন্দলালের গৃহের সামনে।

ঘরে পুত্র সন্তান এসেছে, সেই আনন্দে পরেরদিন সকালে, সকল গোকুলবাড়ির মধ্যে মিষ্টান্ন বিতরণ করেছিলেন নন্দ। ওই দিন প্রত্যেক গোকুলবাসী কৃষ্ণের জন্মকে ঘিরে মেতে উঠেছিলেন আনন্দে। এরপর থেকেই জন্মাষ্টমীর পরের দিনটি নন্দ উত্‍সব হিসেবে পালন করা হচ্ছে যুগ পরম্পরায়।

কি মাহাত্ম্য এই নন্দ উত্‍সবের?

নিষ্ঠুর কংসকে হত্যা করতে মর্ত্যে জন্ম নেন বিষ্ণুর অষ্টম অবতার ভগবান শ্রী কৃষ্ণ। তিনি মাতা দেবকীর সন্তান হিসেবে জন্মগ্রহণ করেন। এই দেবকী ছিলেন কংসের ভগ্নী আর বাসুদেবের স্ত্রী।

সেদিন গভীর রাত্রে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম গ্রহণ করার পর, তাঁর পিতা বাসুদেব গোকুলে পৌঁছে নন্দের আলয়ে প্রবেশ করে অচেতন মা যশোদার পাশে রেখে দেন কৃষ্ণকে। এর পরিবর্তে তিনি নন্দের কন্যাকে দেবকীর কাছে নিয়ে আসেন।

পরেরদিন সূর্যোদয়ের পর নন্দ যখন দেখেন যশোদার কোল আলো করে পুত্র সন্তান এসেছে, তখন সেই খবর তিনি সকল গোকুল বাসীকে দেন। সেদিন গোকুল রাজ ছোট্ট কৃষ্ণের জন্মের আনন্দে নানা সুস্বাদু খাবার বিতরণ করেছিলেন গোকুলে।

এই গোকুলেই বেড়ে ওঠেন শ্রীকৃষ্ণ এবং পরবর্তীকালে তিনি তাঁর মামা কংসকে হত্যা করে পৃথিবীকে তাঁর ত্রাসের হাত থেকে রক্ষা করেন। ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানে জন্মাষ্টমীর সঙ্গে সঙ্গে এই নন্দ উৎসবও সমান গুরুত্ব পেয়ে আসছে।

কি ভাবে পালিত হয় এই নন্দ উত্‍সব?

যদিও অতীতে নন্দ উত্‍সব বহুল প্রচলিত ছিল তবে এখন সেটা কতকটা বিলুপ্তির পথে। পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলায় মহাসমারোহে জন্মাষ্টমীর পাশাপাশি পালিত হতো নন্দ উত্‍ সবও। এদিন গৃহস্থেরা নানা প্রসাদ বানিয়ে থাকেন যার মধ্যে অন্যতম হল তালের বড়া।

ছোট্ট শিশুরা কৃষ্ণর সাজে সেজে এদিন ছড়া কেটে বা গান গেয়ে এই তালের বড়া সংগ্রহ করত বাড়ি বাড়ি গিয়ে। এই ছড়াগুলির মাধ্যমে শ্রীকৃষ্ণের জীবনের বিভিন্ন ঘটনা গুলি তুলে ধরা হয়। খাদ্য রসিকদের কাছে এই উৎসব কিন্তু বেশ গুরুত্বপূর্ণ। নন্দ উত্‍সবের দিন যে ধরনের লোভনীয় প্রসাদ তৈরী করা হয় সেটি এড়িয়ে যাওয়ার সাধ্য কারোর নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *