হতদরিদ্র দিনমজুরের মেয়ে জটিল রোগে আক্রান্ত,মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সাহায্যের আবেদন
হতদরিদ্র দিনমজুরের মেয়ে জটিল রোগে আক্রান্ত। স্থানীয় চিকিৎসকরা সঠিক রোগ ধরতে পারছেন না। বাইরে গিয়ে চিকিৎসা করার সামর্থ্য তাদের নেই। নেই স্বাস্থ্য সাথী কার্ড। অসহায় এই পরিবার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের ২ নং ব্লকের সুলতান নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ছত্রক গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর নুর সালামের বড় মেয়ে নুর ফাতেমা বয়েস ৯,এক বছর ধরে জটিল রোগে আক্রান্ত।মেয়ের চিকিৎসা প্রায় এক বছর ধরে চালিয়েছে পরিবার।
কিন্তু বর্তমানে লকডাউনে টাকার অভাবে থেমে গেছে চিকিৎসা।চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু শয্যায় রয়েছে নুর ফাতেমা।বাবা-মা তাদের কন্যা সন্তানটিকে বাঁচাতে চায় কিন্তু কোথায় পাবে চিকিৎসার জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা। তাহলে কি চিকিৎসার অভাবে বাবা মায়ের চোখের সামনে তিলে তিলে মারা যাবে শিশুটি?ভোটের আগে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের জন্য ‘দুয়ারে সরকার’ এ আবেদন করেছেন পরিবার।ভোটপর্ব কেটে গেলেও এখনো পর্যন্ত হয়নি কার্ড। তাহলে কি শুধুমাত্র ভোটের প্রতিশ্রুতি ছিল এই ‘দুয়ারে সরকার’,প্রশ্ন পরিবারের।
নুর সালামের স্ত্রী অঞ্জলী খাতুন,তাদের চার সন্তান। বড় মেয়ে নুর ফাতেমা। জন্মের পর প্রায় ছয় বছর স্বাভাবিক শিশুর মতো চলাফেরা করছিল। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ত। তারপর ধীরে ধীরে সব পাল্টে যায়। শরীরে জটিল রোগ বাসা বাধে।হাত পা অকেজো হয়ে পড়ে।বাক শক্তি হারিয়ে যায়। এখন সবসময় বিছানায় শুয়ে কাতরাতে থাকে।সুদে টাকা ধার দেনা করে হরিশ্চন্দ্রপুর ও চাঁচল এলাকার একাধিক চিকিৎসককে দেখিয়েছেন কিন্তু চিকিৎসকরাও রোগটিকে চিহ্নিত করতে পারছে না।তাঁরা ব্যাঙ্গালোর নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।সেখানে চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল।চার লক্ষ টাকা প্রয়োজন।অসহায় এই পিতার চিকিৎসা করানোর সাধ্য নেই।
দরিদ্র দিনমজুর বাবা নুর সালাম মেয়ের সু-চিকিৎসার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন। পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের কাছেও মেয়ের চিকিৎসা চালানোর জন্য সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। সকলের সহযোগিতায় হয়তো নুর ফাতেমা ফিরে পাবে নতুন জীবন।
অসুস্থ মেয়ের মা অঞ্জলি খাতুন বলেন,” আমার মেয়ে জটিল রোগে আক্রান্ত। শোচনীয় অবস্থা। বিছানায় শয্যাশায়ী। চাঁচল এবং হরিশ্চন্দ্রপুরে বহু ডাক্তার দেখিয়েছি। কেউ সঠিক রোগ ধরতে পারেনি। ব্যাঙ্গালোর নিয়ে যেতে বলেছে। সেই আর্থিক সামর্থ্য আমাদের নেই। স্বাস্থ্য সাথী কার্ডও হয়নি এই অবস্থায় সরকার পাশে না দাঁড়ালে মেয়েটা কে বাঁচানো সম্ভব হবে না।”
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য শেখ আসমাউল হক বলেন,”এরা ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করতো। লকডাউনের পর থেকে এখানেই আছে। শোচনীয় অবস্থা পরিবারের। ব্যাঙ্গালোর নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করার মতন সামর্থ্য তাদের নেই। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এর স্লিপ এখনো পাইনি। আমরা চেষ্টা করছি এদের পাশে থাকার।”
হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নং ব্লকের বিডিও পার্থ দাস বলেন,” পরিবারটির কথা শুনেছি। পরবর্তী সময় যখন স্বাস্থ্য সাথী কার্ড হবে তখন তারা যাতে পায় সেটা আমরা দেখব। এছাড়াও প্রশাসনিকভাবে আমরা তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করব।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছিলেন স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে রাজ্যের সকল মানুষ বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবে। কিন্তু এরকম হতদরিদ্র একটি পরিবার যদি এই কার্ডের সুবিধা না পায় সেটা দুর্ভাগ্যজনক। বাচ্চা মেয়েটি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। মেয়েটির সঠিক চিকিৎসার জন্য প্রশাসনের উচিত পাশে দাঁড়ানো।