রদবদলের পর গুরুত্ব বাড়ল মহিলাদের; তবু এখনও এগিয়ে দিদি পিছিয়ে মোদী

নিউজ ডেস্ক: বুধবার বিশাল রদবদল হয়েছে মোদী ক্যাবিনেটে, আর তার ফলে ৫ থেকে মহিলা মন্ত্রীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১১। কিন্তু তবু হিসাবের নিরিখে বাংলার তুলনায় পিছিয়েই থাকল কেন্দ্র। মমতা ব্যানার্জীর মন্ত্রিসভায় ৪৪ জন মন্ত্রীর মধ্যে ৮ জন হলেন মহিলা, কিন্তু সেইখানে কেন্দ্রে ৭৮ জন মন্ত্রির মধ্যে মাত্র ১১ জন হলেন মহিলা।

অবশ্য। ২০০৪ সালের মনমোহন সরকারের পর এই প্রথম কোনও কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটে এতজন মহিলা একসাথে   দায়িত্বভার সামলাবেন।

২০১৪ সালে কেন্দ্রের বাগডোর মোদীর হতে চলে যেতে মাত্র ৬ জন্ মহিলা তাতে স্থান পেয়েছিলেন। দ্বিতীয় টার্মেও মোদীর মন্ত্রিসভায় ছিলেন মাত্র ৫ জন মহিলা মন্ত্রী। পূর্ণমন্ত্রী হিসাবে ছিলেন নির্মলা সীতারামন, স্মৃতি ইরানি আর প্রতিমন্ত্রী হিসেবে ছিলেন সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি এবং রেণুকা সিংহরা।

কিন্তু এইবার মোদী মন্ত্রিসভায় এসেছেন সাতটি নতুন মুখ। কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন উত্তরপ্রদেশের   আপনা দলের সাংসদ অনুপ্রিয়া পটেল। প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখা ভালো, প্রথম মোদী মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীও ছিলেন অনুপ্রিয়া।

কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ত্ব পেয়েছেন কর্নাটকের সাংসদ শোভা কারান্দলাজে। দিল্লির আইনজীবী-সাংসদ মীনাক্ষী লেখিকে বিদেশ মন্ত্রক এব‌ং কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে । দর্শনা জার্দোস হয়েছেন কেন্দ্রীয় বস্ত্র ও রেল মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী । অসমের সাংসদ প্রতিমা ভৌমিককে সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ণ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন ভারতী পওয়ার।

মোদী মন্ত্রিসভায় নারীশক্তির প্রাধান্য পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে এদিন টুইট করেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। তিনি লেখেন, ‘‘মহিলাদের নেতৃত্বে উন্নয়ন এবং আত্মনির্ভর ভারতের উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা-ই প্রতিফলিত হচ্ছে নয়া মন্ত্রিসভায়।’’

বিজেপি-র মহিলা মোর্চার সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পালও এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘বিজেপি বরাবরই নারীদের সম্মান করে এসেছে। এটাই আমাদের দলের আদর্শ ও নীতি। বিভিন্ন প্রকল্পের মধ্য দিয়ে মেয়েদের গুরুত্ব বাড়ানোর বিষয়টি গত কয়েক বছরে বুঝিয়ে দিয়েছে মোদী সরকার। নারী ক্ষমতায়ন বিজেপি-র ‘সবকা কা সাথ, সবকা বিকাশ’ নীতিরই অঙ্গ। সেই আদর্শই যে বজায় রয়েছে, তাই বোঝা গেল মোদীর নতুন মন্ত্রিসভায়।’’

বাংলার পঞ্চায়েত দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী শিউলি সাহা মমতার মন্ত্রিসভা এবং মোদীর মন্ত্রিসভা তুলনা টেনে বলেন ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই মহিলাদের ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী। সরকারে এসে নারীদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের সূচনা করে তিনি চেয়েছেন, সমাজের নানা স্তরেই যেন অগ্রাধিকার পান মহিলারা। দেশের অগ্রগতিতে মহিলারা অংশগ্রহণ না করলে পিছিয়েই থাকতে হয়— বিবেকানন্দের এই নীতিতেই বিশ্বাসী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বিষয়ে আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর থেকে পাঠ নেওয়া উচিত মোদী সাহেবের।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *