মেয়ের মুখ চেয়ে আরো ১৮ বছর বেচেঁ থাকতে চাই: ভরত কল

নিউজ ডেস্ক: সদ্যই ৫২ বছরে পা রেখেছেন বাংলা টেলিজগতের বিখ্যাত অভিনেতা ভরত কল। আবেগপ্রবণ ভরত কল সেই বিশেষ দিনে ভাগ করে নিলেন জীবনের সুখ দুঃখ মিলিয়ে নানা অভিজ্ঞতার কথা।

“অনেকেই বলতে শুনেছি, জীবনভর কত কষ্ট করলাম! শুনে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা জানাই, হে সর্বশক্তিমান! আমার মতো কষ্ট যেন কাউকে না করতে হয়। যাঁরা মারণ রোগের মুখোমুখি হয়েছেন তাঁরা জানেন, মৃত্যুর গন্ধ কী ভয়ঙ্কর! অনেকে এও জানতে চান, কী করে এত লড়লাম?”

জন্মদিনের দিন তাঁর সেই লড়াকু মনোভাবের কথাই তুলে ধরেছেন ভরত কল। তিনি বলেন, “জানেন তো, দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে সবাই ঘুরে দাঁড়াতে বাধ্য। আমিও সেটাই করেছি। যখন দেখেছি লড়াই ছাড়া গতি নেই, দাঁতে দাঁত চেপে লড়ে গিয়েছি। একেক সময় মনে হয়, এখন বেঁচে থাকাই সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়। অতিমারি, প্রাকৃতিক দুর্যোগের দাপটে জীবন তছনছ। কেউ ভাল নেই।”

ক্যানসার আক্রান্ত সহ অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার প্রসঙ্গও এদিন টানেন তিনি। “আজ খুব মনে পড়ছে ঐন্দ্রিলা শর্মার কথা। ঐন্দ্রিলা সান বাংলার ‘জিয়ন কাঠি’ ধারাবাহিকে আমার মেয়ে হয়েছিল। ওর লড়াইয়ের মধ্যে আমার বেঁচে থাকার লড়াইয়ের ছায়া দেখতে পাই। দিল্লিতে চিকিৎসা করাতে গিয়েও আমার নিয়মিত খবর নিত, ‘তুমি ভাল আছ তো’? আমি ওকে পাল্টা বলতাম, আগে তুমি ভাল থাক। এখন তোমায় আগে ভাল থাকতে হবে। আমি ঠিক আছি।”

 

অনস্ক্রিনে ভরত কলকে সুশান্ত দাসের ‘দীপ জ্বেলে যাই’-এর হিন্দি রিমেক ‘রিস্তো কা মঞ্ঝা’ তে দেখা যাবে।

বাংলায় এই সিরিয়ালটি তে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তী এবং নবনীতা দাস। তবে এর হিন্দি রিমেকে মুখ্য ভূমিকায় থাকছেন ক্রুশল আহুজা-আঁচল গোস্বামী।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য আঁচলের বলিউডে একাধিক ধারাবাহিকে অভিনয় করার অভিজ্ঞতা আছে।

আঁচলের অন স্ক্রীন বাবার ভূমিকায় দেখা যাবে ভরত কলকে। এ ছাড়াও তিনি কাজ করছেন দেবালয় ভট্টাচার্যের হিন্দি ওয়েব সিরিজ। এই ওয়েব সিরিজ অ্যামাজন প্রাইমে রিলিজ করা হবে।

ভরতের জন্মদিনটি স্পেশাল করে তুলতে কোনও ত্রুটি রাখেননি তাঁর মা আর স্ত্রী জয়শ্রী মুখোপাধ্যায়। তাঁরা দুজনে জমিয়ে রান্নাবান্না করছেন। যেখানে ভরতের মা রেঁধেছেন কাশ্মীরি রোগন জোস আর আলুর দম, স্ত্রী জয়শ্রী পরিবেশন করেছেন বাঙালি মতে পাঁচ রকম ভাজা, ডাল, তরকারি ইত্যাদি।

পরিবারের এত ভালোবাসা পেয়ে আপ্লুত ভরত কল জানালেন, “আমি সত্যিই ভাগ্যবান। ক’জনের দুই রীতি মেনে এ ভাবে জন্মদিন পালন হয়? আজ ইশ্বরের কাছে ‘রিটার্ন গিফট’ হিসেবে একটা চাওয়া আছে। কী সেটা? ঈশ্বরের কাছে আন্তরিক প্রার্থনা, অন্তত আরও ১৮ বছর যেন বেঁচে থাকি। তত দিনে মেয়ের পড়াশোনা শেষ হয়ে যাবে। আশা, নিজের পায়ে দাঁড়িয়েও যাবে। তখন ছুটি নেব। আমার বাবা আমার লড়াইয়ের নেপথ্য শক্তি ছিলেন। আমার মেয়ে মা-ঘেঁষা। কিন্তু সমস্যা পড়লেই আমার কাছে ছুটে আসে।আমি চলে গেলে ওকে সমস্যা থেকে টেনে তুলে লড়াইয়ে ফেরাবে কে?”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *