ফুটপাথের ফুচকা জিন্দাবাদ,বিচিত্র সমাবেশ মহানগরীর ফুটপাথে
ইন্দ্রজিৎ রায়, সম্পাদক – ফুচকা বহু মানুষের প্রিয় খাদ্যর তালিকায় পরে। নিয়মিত ফুচকা খাওয়া অনেক কিশোরী মেয়ের তীব্র নেশার মতো। না খেলেই নয়। কলকাতা শহরে ফুচকা বিক্রি করেন যারা তাদের অনেকেই বিহার বা উত্তরপ্রদেশ থেকে কলকাতায় এসেছেন। তারপর কলকাতায় থেকে গিয়েছেন। ফুচকা বিক্রির আয়ে জীবিকা নির্বাহ করে যে টাকাটা সঞ্চয় হয়, তা দেশে পাঠান। সেই টাকায় ছেলেমেয়ে মানুষ করা থেকে শুরু করে বৃদ্ধ বাবা মায়ের ভরণপোষণ সবই চলছে।সে হিসেবে বলা যায়, কলকাতা বহু সংসার রক্ষা করেছে।
ফুচকা খাবার হিসেবে স্বাস্থ্যকর নয়। কিন্তু নেশা একবার ধরলে যেমন ছাড়া যায় না, ফুচকা যারা ভালবাসেন তাদের জিভে জল আসবেই ফুচকা খাবার প্রস্তাব পেলে। ফুচকাওয়ালারা শেষ যে ফুচকাটি ফাউ হিসেবে দেন সেটি এক বিরাট প্রাপ্তি।
করোনা পর্বে ফুচকাওয়ালাদের রোজগারে টান পড়েছিল। শহরের এক ফুচকাওয়ালা ইউপির প্রীতম সিং বললেন, লকডাউনে খুব কষ্টের দিন গ্যাছে দাদা। এখন আবার বাজার জেগে উঠেছে।
ছেলেদের থেকে মেয়েরা কেন বেশি ফুচকা খান, তা রহস্যজনক বিষয়। বিষয়টি গবেষণা সাপেক্ষ।করোনা পর্বে অনেকেই পেশা পাল্টাতে বাধ্য হয়েছেন। বাঙালি ছেলেরা সাধারণত ফুচকা বেচেন না। কিন্তু চাকরি হারিয়ে ফুচকার ব্যবসা করছেন সুদীপ বর্মন। সুদীপ এমএ পাশ সে কথাও জানা গেল। সুদীপ বললেন, কী করব বলুন? বাড়িতে চারটে পেট। বউ আছে, ছেলে আছে, বিধবা মা আছে।
জানা গেল, ফুচকা বেচে আয় ভালই। মাসে ১০ হাজার টাকা গড়ে লাভ। কেউ কেউ তারও বেশি রোজগার করছেন।ফুচকার দোকানে সকলকে স্বাগত জানায়। ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে। কারণ ওই ফুচকা তীব্র নেশা। ইদানীং পাঁচ তারাতেও সুসজ্জিত প্লেটে ফুচকা বিক্রি হচ্ছে। তার দাম চড়া। কিন্তু যারা ফুটপাথের ফুচকার স্বাদের মজা পেয়েছেন তারা পাঁচ তারা ছেড়ে ফের ফুটপাথে নেমে আসবেন, একথা হলফ করেই বলা যায়।
শিয়ালদার একটি ফুটপাথে গোগ্রাসে ফুচকা খাচ্ছিলেন পেশায় যৌনকর্মী শিখা মাইতি। সঙ্গে তার পুরুষসঙ্গী। দুজনে মিলে ১০০ টাকার ফুচকা খেলেন।এরপর সেই একই দোকানে ফুচকা খেতে এলেন এক যুবক। সঙ্গে তার প্রেমিকা। মুসলিম সেই তরুণীর আপাদমস্তক বোরখায় ঢাকা।
পৃথিবী আলো অন্ধকারে চলে। মানুষের জীবনও তাই। প্রকৃতির এই বিপরীত নিয়ম যেন ফুচকাওয়ালার অঙ্গুলিহেলনেই চলছে।ফুটপাথ তাই দেখালো!