করোনা আতঙ্কে এক ঘরে মহিলা, মৃত মায়ের পাশে দুদিন পড়ে রইল অভুক্ত শিশু
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ করোনার সংক্রমণ নিয়ে মানুষের মনে রয়েছে তীব্র ভীতি ও আতঙ্ক। এই আতঙ্ক যে কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে তার প্রমাণ মিলল মহারাষ্ট্রের পিম্পরির চিঞ্চাওয়াড় গ্রামে। ওই গ্রামে এক মহিলা কিছুদিন আগে অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রতিবেশীরা মনে করেছিল মহিলা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাই ওই মহিলাকে কার্যত এক ঘরে করে রাখা হয়েছিল। ওই মহিলার স্বামী উত্তরপ্রদেশের কর্মসূত্রে থাকেন। মহিলা তাঁর দু বছরের বাচ্চাকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন। দুদিন ধরে ওই মহিলাকে আর দেখতে পাওয়া যায়নি। উল্টে তাঁর ঘর থেকে আসছিল পচা গন্ধ। এরপরই বাড়ির মালিক পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে ঘরের দরজা ভেঙে দেখতে পায়, ওই মহিলা মরে পড়ে আছেন। তাঁর বুকের উপর খেলা করছে ছোট্ট শিশু। শিশুটিকে উদ্ধারের পর অবশ্যই কেউই তার দায়িত্ব নিতে চায়নি। করোনার ভয়ে সকলেই এক ফুটফুটে শিশুর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। এই অবস্থায় এগিয়ে আসেন এখানে দুই মহিলা কনস্টেবল। সুশীলা গাভালে ও রেখা ওয়াজে নামে ওই দুই কনস্টেবল এই শিশুটির দায়িত্ব নেয়। সুশীলা জানিয়েছেন, ওই শিশুটিকে বাড়ি নিয়ে আসার পর সে এত তাড়াতাড়ি দুধ খাচ্ছিল যে বোঝাই যাচ্ছিল গত দু’দিন তার পেটে একটুকু জল পর্যন্ত পৌঁছায়নি। সুশীলা আরও জানিয়েছেন, ওই শিশুটির সামান্য জ্বর ছিল। কিন্তু করোনা পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে তার রিপোর্ট নেগেটিভ। আপাতত খাবার পেয়ে ও যত্নে বাচ্চাটি একেবারে সুস্থ আছে। তবে তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে সরকারি ক্রেশে। খবর দেওয়া হয়েছে তার বাবাকে। মৃত মহিলার দেহ ময়না তদন্তে জানা গিয়েছে, তিনি করোনা আক্রান্ত হননি। অন্য কোন কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু প্রতিবেশীরা অযথাই ভয় পেয়ে এমন এক নজিরবিহীন কাণ্ড ঘটিয়েছেন।