কেন্দ্রের সরকার বন্ধ করছে ঐতিহ্যবাহী আলিপুরদুয়ার জংশন রেলওয়ে উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়
নিউজ ডেস্ক: আবার নতুন করে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ। এবার সরকরি স্কুলে হাত দিচ্ছে সরকার। আলিপুরদুয়ার ডিআরএম অফিসের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভে শামিল হল তৃণমূল কংগ্রেস। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বন্ধ করতে চাইছে আলিপুরদুয়ার জংশন রেলওয়ে উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়। ঐতিহ্যবাহী আলিপুরদুয়ার জংশন রেলওয়ে উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় হয়তো আর কিছুদিনের মধ্যেই উঠে যাবে। এই সিদ্ধান্ত আটকাতে বিক্ষোভ কর্মসূচি হয় মঙ্গলবার। ডিআরএম-কে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। তবে বিজেপি সেঁকার পুরো বিষয়টা কিভাবে গুরুত্ব দেবে সেই নিয়ে সংশয় প্রকাশ চলছে।
আরও পড়ুন-‘মুখ্যমন্ত্রীর আশীর্বাদ নিয়ে নতুন পথ চলা শুরু করলাম’, খুশি মদন মিত্র
রেলওয়ে হাই সেকেন্ডারি স্কুল খুবই ঐতিহ্যবাহী স্কুল। এই স্কুল তৈরি হয় ১৯৫৩ সালে।
বিদ্যালয়টি বহুদিন থেকেই ছাত্র ছাত্রী সংখ্যায় ধুকছিল। এর মূল কারণ রেল কর্মচারীদের নিজেদের ছেলে মেয়েদের এই বিদ্যালয়ে ভর্ত্তি করাতে অনিহা এবং আলিপুরদুয়ারে রেলের কর্মচারীদের সংখ্যা ব্যাপক হারে হ্রাস পাওয়া। রঙ্গিয়া ডিভিশন হবার ফলে এবং নিউ জলপাইগুড়ি ও নিউ কোচবিহারে রেলের কাজকর্ম ও দপ্তর বৃদ্ধির ফলে একটা বড় অংশের কর্মচারী সেখানে বদলি হয়।
আরও পড়ুন-করোনা টিকার ২ ডোজ থাকলেই মিলবে মদের দামে ছাড়
আলিপুরদুয়ারে স্পোর্টস কোটা, কালচারাল কোটা ও স্পেশাল কোটায় রিক্রুটমেন্ট হতো। এখন কর্মচারী অবসর নিলে নতুন চাকুরী হচ্ছে না বা বদলি হয়ে কেউ শূন্যতা পূরণে আসছে না। ফলে কর্মী সংকোচন থেকেই ছাত্র সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। এজন্যই ২০% এর নীচে রেলকর্মীদের সন্তান রয়েছে স্কুলে। অতীতে প্রতি ক্লাসে চার চারটি সেকশন ছিল। এখন সীমিত সংখ্যক রেল পরিবারের ছাত্র ছাত্রী ও বেশীরভাগ নন রেল পরিবারের ছাত্র ছাত্রী নিয়ে বিদ্যালয় চলছে।
আরও পড়ুন-বিধানসভা ঘুরলেন তৃণমূল অভিনেত্রী-সাংসদ মিমি চক্রবর্তী
আগে বিদ্যালয় ছিল বাংলা মাধ্যমের, কিন্তু ২০১৬ সালে স্কুলটি সি বি এস ই সিলেবাসে নিয়ে যাওয়া হয়। এই সময় থেকে ছাত্র সংখ্যা সামান্য বাড়ে। বাংলা মিডিয়ামে পঃবঃ সরকারের অধীনে বিদ্যালয় থাকার সময় একবার নন রেল ছাত্র ছাত্রী ভর্ত্তি নেওয়া হবেনা বলে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় ছাত্র ছাত্রীর অভাবে স্কুল বন্ধ হবার মুখে চলে যায়।
এক সময় চওড়া ডেভেলপমেন্ট ফি এর জন্য ও আন্দোলন হয়েছে। নাগরিক আন্দোলনের ফলে পুনরায় ভর্ত্তি চালুহয়। এরপর স্কুল বাচাতে স্কুলকে সি বি এস ই সিলেবাসের স্কুলে পরিনত করা হয়, রেল কর্মীদের সন্তান রেল স্কুল বাদে অন্য স্কুলে পড়লে ফি রি এমবার্সমেন্ট দেওয়া শুরু হয়। এর পর থেকে আমরা রেলকর্মীদের সন্তান সংখ্যা কমতে দেখতে শুরু করি।
আরও পড়ুন-১১ মাসের শিশুর মাথায় আটকে গেল হাঁড়ি,হাসপাতাল ও ফায়ার ব্রিগেডেরের প্রচেষ্টায় বেরোলো হাঁড়ি
আমরা প্রাক্তনী হিসেবে চাই ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যালয় বর্তমান পরিকাঠামোয় সি বি এস ই সিলেবাসেই থেকে যাক। উঠে গেলে বা কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের সাথে যুক্ত হয়ে দমনপুর চলে গেলে তা হবে দুর্ভাগ্যজনক। এই মুহুর্তে মোট ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা-১২১৬ জন। এর মধ্যে রেলকর্মী পরিবারের ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা ২৪৮ জন। মোট সংখ্যার ২০% হয় ২৪৩ জন।
এই নিয়ে বিশেষ ভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছে এই স্কুলের দুই প্রাক্তন ছাত্র। প্রসেনজিৎ রায়, ১৯৯৫ মাধ্যমিক ব্যাচ ও সমীরণ দেবনাথ, ২০০৬ উচ্চ-মাধ্যমিক ব্যাচ।