প্রাচীন ঐতিহ্যপূর্ণ উৎসব ‘নবান্ন’ উৎসব পালিত হল করোনা আবহেই

নিউজ ডেস্ক: নবান্ন উৎসব হিন্দুদের একটি প্রাচীন প্রথা। এপার বাংলা ও ওপার বাংলার ঐতিহ্যবাহী শস্যোৎসব হল চির পরিচিত নবান্ন। পালিত হয় অগ্রহায়ন মাসেই। হিন্দুশাস্ত্রে নবান্নের উল্লেখ ও তার রীতি নির্দিষ্ট করে বর্ণিত করা রয়েছে। বাংলার কৃষি সমাজে শস্য উৎপাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে যে সকল আচার-অনুষ্ঠান ও উৎসব পালিত হয়, নবান্ন তার মধ্যে হল অন্যতম।

আরও পড়ুন-‘‌একসঙ্গে কাজ করতে হবে এটা আমি বলে গেলাম’‌, মহুয়াকে কড়া বার্তা দিলেন মমতা

বাংলার মানুষের জীবনে অবিচ্ছেদ্য আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে ‘অগ্রহায়ণ মাস’ ও ‘নবান্ন’। অগ্রহায়ণ শব্দের অর্থ বর্ষ শুরুর মাস। আর অগ্রহায়ন মাসে গ্রাম বাংলায় অনুষ্ঠিত হয় নবান্ন। দেশের প্রাচীনতম উৎসবগুলির মধ্যে একটি নবান্ন উৎসব।
কার্তিক পেরিয়ে নীরবে আবির্ভাব ঘটে অগ্রহায়ণের। একসময় বাঙালির নতুন বছর শুরু হতো অগ্রহায়ণ মাস দিয়ে, তাই এ মাসের নাম হয়েছে অগ্রহায়ণ। এই মাসের প্রথম দিনে উদ্‌যাপিত নবান্নই বাঙালির ঐতিহ্যবাহী শস্য উৎসব ।

আরও পড়ুন-‘আম, আমসত্ত্ব ও আমের আচার, সবটাই আপনারা আমাকে দিয়েছেন’ জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

কোথাও কোথাও প্রথমে পালিত হলেও কোথাও আবার অগ্রহায়নের মাঝে আবার শেষে পালিত হয়ে থাকে। বাংলার কৃষিজীবী সমাজে শস্য উৎপাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে যেসব অনুষ্ঠান ও উৎসব পালিত হয়ে থাকে, নবান্ন তার অন্যতম। নবান্নের শব্দগত অর্থ ‘নতুন অন্ন’। নতুন আমন ধান কাটার পর সেই ধান থেকে প্রস্তুত চালের প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত উৎসবই নবান্ন। সাধারণত, অগ্রহায়ণ মাসে আমন ধান পাকার পরে নবান্ন উৎসব হয়। ঋতুবৈচিত্র্যে হেমন্ত আসে শীতের আগে। কার্তিক আর অগ্রহায়ণ মাস নিয়েই হেমন্ত ঋতু।

আরও পড়ুন-যাত্রী নিয়ে বিবাদের জেরে এক রিক্সাচালকের মাথা ফাটালো আরও দুই রিক্সাচালক!

নবান্ন উৎসবের সঙ্গে মিশে আছে বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির নানা অনুষঙ্গ। প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালি জাতি-ধর্ম-বর্ণকে উপেক্ষা করে নবান্নকে কেন্দ্র করে উৎসবে মেতে ওঠে। সামাজিক প্রথা, রীতি ও কৃত্যের পরিক্রমায় স্থানবিশেষে মাঘ মাসেও নবান্ন উদ্‌যাপনের প্রথা রয়েছে।

বাংলার ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসব উদ্‌যাপন করার জন্য মেয়ে-জামাইসহ আত্মীয়দের নিমন্ত্রণ করে নতুন চালের পিঠা ও পায়েস রান্না করে ধুমধামের সঙ্গে ভূরিভোজের আয়োজন করা হয়। গ্রামের বধূরা অপেক্ষা করেন বাপের বাড়িতে গিয়ে নবান্ন যাপনের জন্য। পিঠা, পায়েস, মুড়ি-মুড়কি আর নতুন চালের ভাতের সুগন্ধে ভরে ওঠে মন।

আরও পড়ুন-“হাতে ক্লাসিক সিগারেটের প্যাকেট গুজে দিলেই পুরভোটের প্রার্থী হওয়া যাবেনা”:নারায়ন গোস্বামী

নিয়ম অনুযায়ী, আমন ধান জমি থেকে ঘরে আসার পর তা থেকে পাওয়া নতুন চাল প্রথম দেবীলক্ষ্মীকে নিবেদন করা হয়। নতুন চালের সঙ্গে ৯ রকমের উপাদান দিয়ে এদিন দেবীর ভোগ তৈরি হয়। এর পরেই গৃহস্থের তরফে নবান্নের ভোগ বিলি করা হয় আগত অতিথিদের মধ্যে। গ্রাম বাংলার অন্যতম উৎস এই নবান্ন। বুধবার ৮ ডিসেম্বর পূর্ব বর্ধমান জেলার, খণ্ডঘোষ ব্লকের কৈয়ড় অঞ্চলের অন্তর্গত বড়ো গোপীনাথপুর গ্রামে অনুষ্ঠিত হল নবান্ন উৎসব।

বৈষ্ণব দ্বারা নাম সংকীর্তন এর পাশাপাশি পুজোও হল বৈষ্ণব দ্বারাই। নিয়ম অনুসারে কাক-কে দেওয়া হয় নবান্নের ভোগ। সবমিলিয়ে মোটের উপর নবান্ন-তে মাতলো বড়ো গোপীনাথপুরের মন্ডল বাড়ি সহ গ্রামবাসীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *