রাজ্যের অন্যতম বকখালি পিকনিক স্পটে বিদ্যুতের সাবস্টেশনের দাবি
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, বকখালি পিকনিক স্পটের কাছা কাছি বিদ্যুৎ দফতরের কোনও সাব স্টেশন নেই।শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা—মাঝে মধ্যেই লোডশেডিং হয়ে যায় এলাকায়।তাছাড়া তো রয়েছে লো-ভোল্টেজের সমস্যা।ফলে পর্যটক থেকে স্তানীয় বাসিন্দারা সবাই তিতিবিরক্ত। বিদ্যুতের ঘাটতি মেটাতে বকখালি পিকনিক স্পটের কাছাকাছি বিদ্যুতের সাব স্টেশনের দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা।
বকখালি সুমুদ্র তটের ব্যবসায়ী বিশ্বজিত মাঝি, সুধা মাইতি, দীপক ভুঁইয়া সহ কয়েকজন বলেন,সুমুদ্রতটে তিনটি হাইমাস বাতির দুটি খারাপ হয়ে পড়ে আছে। একটি মাঝে মধ্যে জ্বলে।বার বার বলা সত্বেও প্রশাসনের কোনো নজর নেই। আর আলো না থাকায় সন্ধ্যার পর থেকে পর্যটকরা এখানে বেড়াতে আসতে পারে না।নদিয়া থেকে আগত রাজা সাফুই, অবন্তিকা, বাটানগর থেকে আগত মনিরুল ইসলাম, সুভাষগ্রাম থেকে আগত সূপর্ণা সরদার,ডি কে বর্মন সহ কয়েকজন পর্যটক বলেন,বকখালির সৌন্দর্যায়ন বাড়াতে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রয়োজন। সরকারি নজর নেই এই পর্যটন এলাকা নিয়ে।বকখালি সুমুদ্র সৈকত কল্যান সমিতির সম্পাদক মধুসূদন মান্না বলেন, আমরা বকখালি সুমুদ্র সৈকত এলাকার উন্নয়ন ও বিদ্যতের হাইমাস বাতি গুলি দ্রুত চালু ও সহ একাধিক ব্যাপারে প্রশাসনকে জানিয়েছি। দেখা যাক কি হয়।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, বকখালি পিকনিক স্পটের কাছাকাছি বিদ্যুৎ দফতরের কোনও সাব স্টেশন নেই। প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে রাধানগর সাব স্টেশন থেকে ফ্রেজারগঞ্জ উপকূল থানাএলাকার বকখালি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। বকখালি ও ফ্রেজারগঞ্জ এলাকায় সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে শতাধিক পর্যটকদের থাকার হোটেল রয়েছে। হোটেলে কমবেশি এসি ঘর রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ লোডশেডিং থাকলে বা লো-ভোল্টেজ হলে এসি ঘরগুলি বন্ধ রাখতে হয়। শুধু তাই নয়, রাস্তাতে আলোর ব্যবস্থা থাকলেও লোডশেডিংয়ের জেরে তা জ্বলে না। ফলে রাস্তায় ঘুরতে বেরিয়ে মানুষকে বিপদে পড়তে হয়। বকখালি থেকে হেনরি আইল্যান্ড পর্যন্ত এই একই সমস্যা।
ফ্রেজারগঞ্জ থেকে সমুদ্রে যাবার রাস্তায় কোনও আলোর ব্যবস্থা নেই। এমনকী দাস কর্নার থেকে সমুদ্র বাঁধের উপরেও কোনও আলো না থাকায় সন্ধ্যার পর পর্যটকেরা ওই বাঁধের দিকে বেড়াতে যেতে পারেন না।ফ্রেজার গঞ্জ এলাকায় রয়েছে সরকারি বেসরকারি সব মিলিয়ে ১০ থেকে ১৫টি বরফকল। কাছাকাছি সাব স্টেশন তৈরি না হওয়ায় বিদ্যুৎ সঙ্কটের জন্য তাদেরও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় সারা বছর ধরে পর্যটকেরা বকখালিতে বেড়াতে আসেন। অথচ বিভিন্ন সময়ে লোডশেডিং থাকায় সমস্যায় পড়তে হয়। এলাকায় একটি সাব স্টেশনের দাবি জানানো হয়েছে বহুদিন। কিন্তু এর কোনও সমাধান হচ্ছে না।বকখালি ফ্রেজারগঞ্জ হোটেলিয়ার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অলোক চক্রবর্তী বলেন, এখানে প্রায় সমস্ত হোটেলে কম বেশি এসি ঘর রয়েছে। হোটেল গুলিতে বড় জেনারেটর নেই। আর লোডশেডিং হলে এসি চালানো যায় না। ফলে পর্যটকদের সমস্যা হয়। একটি সাব স্টেশন হলে বিদ্যুতের ঘাটতি থাকবে না।একে দীর্ঘ লক ডাউনের কারনে আমাদের ব্যবসা দীর্ঘ দিন বন্ধ ছিলো। এখন আস্তে আস্তে পর্যটক মুখী হচ্ছে বকখালি। তাই এই বিদ্যুতের সমস্যাটা দ্রুত মেটার দরকার আছে বলে মনে করি।
বিদ্যুতের সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষুদ্র শিল্প, বিদ্যুৎ ও চিরাচরিত শক্তির কর্মাধ্যক্ষ নীলকন্ঠ বর্মণ।তিনি বলেন, বকখালির সমুদ্র সৈকতে ঢোকার মুখে ডান দিকে ও হাতি কর্নারের কাছে কয়েকটি হাইমাস আলোর দরকার। এ ছাড়া পর্যটকেরা অনেকে এখানে এসে এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করেন। কিন্তু ওই এলাকার যাওয়ার রাস্তায় কোনও আলো না থাকায় পর্যটকদের সমস্যার পাশাপাশি স্থানীয়রাও সমস্যায় পড়েন। তাই বিদ্যুতের ঘাটতি মেটাতে বকখালিতে একটি সাব স্টেশনের খুব দরকার।
দাবিগুলি বিভাগীয় দফতরে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কেও লিখিত ভাবে জানিয়েছি।জেলা বিদ্যুৎ দফতরের এক আধিকারিক জানান, বকখালিতে সাব স্টেশনের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।তবে সরকার চায় বকখালি কে উন্নয়নের চাদরে মুড়ে ফেলতে।